আন্তর্জাতিক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার করুন
প্রতিবেদক : বিডিএস বুলবুল আহমেদ
পাকিস্তান রাষ্ট্রের স্থপতি মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ এবং দেশটির প্রথম প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খানের ব্যক্তিগত ইতিহাসের গভীরে অনুসন্ধান করলে এক ভিন্ন চিত্র বেরিয়ে আসে। একুশ শতকের এই সময়ে দাঁড়িয়ে যখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ধর্মীয় সংঘাতের আবহ বিরাজমান, তখন এই দুই প্রধান মুসলিম ব্যক্তিত্বের ব্যক্তিগত জীবনে হিন্দু সামাজিক কাঠামোর সঙ্গে সংযোগ এবং সেই সমাজ থেকে বহিষ্কারের এক বেদনাদায়ক গল্প জানা আবশ্যক। বিশ্লেষকদের মতে, তৎকালীন সামাজিক কাঠামোর সেই সংকীর্ণতা এবং জাতিগত বিভেদই পরোক্ষভাবে দেশভাগের পথ প্রশস্ত করেছিল।
কায়েদে আজম জিন্নাহ: যে ‘ঠক্কর’ পরিবার ইসলাম গ্রহণ করেছিল
পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, যাঁর পুরো নাম ছিল মোহাম্মদ আলী ঝিনাভাই “জিন্নাহ”, মূলত গুজরাটের কাথিয়াওয়াড় অঞ্চলের এক হিন্দু লোহানা বর্ণের পরিবার থেকে এসেছিলেন।
👉 হিন্দুত্ববাদী পটভূমি
- পারিবারিক পরিচয়: জিন্নাহর প্রপিতামহ ছিলেন প্রেমজিভাই মেঘজি ঠক্কর, এবং তাঁর দাদা ছিলেন পুঞ্জাভাই ঠক্কর। অর্থাৎ, তিনি ছিলেন এক হিন্দু ঠক্কর পরিবারের বংশধর।
- বহিষ্কারের কারণ: জিন্নাহর বাবা ঝিনাভাই পুঞ্জা ঠক্কর যখন মাছ ব্যবসায় যুক্ত হন, তখন তৎকালীন লোহানা বর্ণের নিরামিষভোজী সমাজে তিনি পরিত্যক্ত হন।
- ধর্ম পরিবর্তন: এই সামাজিক বয়কটের শিকার হয়ে ঝিনাভাইকে গুজরাটের কাথিয়াওয়াড় ছেড়ে সিন্ধু প্রদেশে চলে যেতে হয় এবং তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। সেখানেই তিনি তাঁর সন্তানদের নাম পরিবর্তন করেন—যাঁর মধ্যে ছিলেন মোহাম্মদ আলী ঝিন্না।
- নাম পরিবর্তন: ইংল্যান্ডে উচ্চশিক্ষার জন্য যাওয়ার পর, নিজেকে আরও আধুনিক ও পেশাদার হিসেবে তুলে ধরার জন্য তিনি নিজের নাম পরিবর্তন করে রাখেন মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ।
বিশ্লেষণ: এই ঘটনাটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। জিন্নাহর মতো একজন ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রনায়কের জন্ম হয় মূলত তৎকালীন সংকীর্ণ হিন্দু সামাজিক কাঠামোর জাতিগত ও খাদ্যভিত্তিক বহিষ্কারের ফলস্বরূপ। তাঁর রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনা ও দ্বিজাতি তত্ত্বের উত্থানে এই সামাজিক বঞ্চনার প্রভাব কতটা ছিল, তা গভীর আলোচনার জন্ম দেয়।
বেগম রানা লিয়াকত আলী খান: আইরিন পন্ত থেকে ‘জাতির জননী’
পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খানের স্ত্রী এবং দেশটির প্রথম মহিলা মন্ত্রী বেগম রানা লিয়াকত আলী খান-এর ব্যক্তিগত ইতিহাস আরও বিস্ময়কর।
👉 শক্তিশালী হিন্দুত্ববাদী পটভূমি
- আসল পরিচয়: তাঁর আসল নাম ছিল শীলা পন্ত, যিনি ভারতের উত্তরাখণ্ডের কুমায়ুনের দীর্ঘ ধুতি ব্রাহ্মণ পরিবার থেকে এসেছিলেন।
- খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ: তাঁর দাদা ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে উচ্চ পদে উন্নীত হওয়ার জন্য খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেন, যার ফলস্বরূপ তিনি ব্রাহ্মণ সমাজ কর্তৃক বহিষ্কৃত হন।
- আইরিন পন্ত: শীলা পন্তের বাবা ছিলেন ড্যানিয়েল পন্ত। শীলা পন্তের নাম হয় আইরিন পন্ত। তিনি ছিলেন একজন বিদূষী, যিনি অর্থনীতি ও আধ্যাত্মিকতা অধ্যয়ন করেন এবং বিশপ কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন।
- লিয়াকত আলীর সঙ্গে পরিণয়: জাতীয় আন্দোলনে সক্রিয় থাকার সময় তিনি লিয়াকত আলীর প্রতি আকৃষ্ট হন। এরপর আইরিন পন্ত ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে রানা লিয়াকত আলী খান নামে পরিচিত হন।
👉 দেশভাগ-পরবর্তী জীবন
- রানা লিয়াকত আলী খান পাকিস্তান আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং দেশভাগের পর স্বামীর সঙ্গে পাকিস্তানে চলে যান।
- লিয়াকত আলী খান নিহত হওয়ার পরেও (১৯৫১ সালে গুলিবিদ্ধ) তিনি পাকিস্তানেই থেকে যান। জল্পনা ছিল যে তিনি ভারতে ফিরে আসবেন, কিন্তু তা ঘটেনি।
- তিনি তিন তালাক প্রথা বিলোপ সহ অসংখ্য সংস্কারমূলক কাজের জন্য কৃতিত্ব পান। তাঁকে ইতালি এবং হল্যান্ডে রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত করা হয় এবং তিনি “জাতির জননী” উপাধি লাভ করেন।
- তিনি তিনবার ভারত সফর করলেও কখনও কুমায়ুনে নিজের পৈতৃক ভিটায় যাননি এবং ১৯৯০ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পাকিস্তানে মারা যান।
বিশ্লেষণ: রানা লিয়াকত আলী খানের ব্যক্তিগত পটভূমিও জাতিগত ও ধর্মীয় বহিষ্কারের গল্প বহন করে। তাঁর পরিবারকে যেমন খ্রিস্টধর্ম গ্রহণের জন্য ব্রাহ্মণ সমাজ থেকে দূরে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল, তেমনি তাঁর মতো একজন উচ্চশিক্ষিত নারীর রাজনৈতিক উত্থানও ধর্ম পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত হয়েছিল।
বিভেদের শিকড় ও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট (১৯৫০-২০২৫)
এই দুই প্রধান নেতার জীবন প্রমাণ করে যে, পাকিস্তানের সৃষ্টিতে কেবল ধর্মীয় আদর্শই নয়, বরং বিদ্যমান সামাজিক কাঠামোর সংকীর্ণতাও একটি অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছিল। যদি ভারতের সামাজিক কাঠামো উদার ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হতো, তবে এই ব্যক্তিত্বরা হয়তো ভিন্ন রাজনৈতিক পথে চালিত হতে পারতেন।
এই প্রেক্ষাপটটি বাংলাদেশের ইতিহাসের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
- ১৯৫০-এর দশকে: পাকিস্তানের শাসকশ্রেণী (যাদের মূল নেতারা জাতিগত সংকীর্ণতার শিকার হয়েছিলেন) যখন বাঙালির ওপর উর্দু ভাষা চাপিয়ে দিতে চেয়েছিল, তখন তা ছিল নতুন রাষ্ট্রের মধ্যেই এক নতুন ধরনের সাংস্কৃতিক বহিষ্কারের চেষ্টা। এর ফলেই ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন জন্ম নেয়।
- ১৯৭১-এ স্বাধীনতার কারণ: দ্বিজাতি তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে তৈরি পাকিস্তান রাষ্ট্র, যা অভ্যন্তরীণ জাতিগত বিভেদের শিকারদের হাতে গঠিত, সেই রাষ্ট্রই যখন বাঙালিকে জাতি হিসেবে স্বীকার করতে ব্যর্থ হলো, তখন সেই ধর্মভিত্তিক ঐক্য ভেঙে যায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙালিরা সেই সংকীর্ণতা ত্যাগ করে জাতীয়তাবাদী চেতনার ভিত্তিতে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে।
- বর্তমান প্রেক্ষাপট (২০২৫): আজকের বাংলাদেশের রাজনীতিতে অসাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মনিরপেক্ষতা প্রধান আদর্শ হিসেবে বিবেচিত। জিন্নাহ এবং রানা লিয়াকতের ব্যক্তিগত ইতিহাস মনে করিয়ে দেয় যে, যেকোনো ধর্ম, সমাজ বা চিন্তাধারার পরিধি সংকীর্ণ হলে বিভেদ অনিবার্য। এই শিক্ষা স্বাধীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রনীতির মূল ভিত্তি হওয়া অপরিহার্য।
সূত্র
১. Choudhury, Nirad C. (1987). Thy Hand! Great Anarch! India: 1921—1952. (সামাজিক বিভেদ ও অস্থিরতা প্রেক্ষাপটে প্রাসঙ্গিক)। ২. Wolpert, Stanley (1984). Jinnah of Pakistan. Oxford University Press. ৩. Khan, Rana Liaquat Ali (1951). Pakistan: The Heart of Asia. (লিয়াকত আলী খানের স্ত্রীকে নিয়ে প্রকাশিত বিশ্লেষণ)।
প্রতিবেদক: বিডিএস বুলবুল আহমেদ
আরও খবর জানতে ভিজিট করুন: পালসবাংলাদেশ ওয়েবসাইটে।
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার করুন
ভারতে Enforcement Directorate (ED) হল অর্থপাচার, বৈদেশিক মুদ্রা লঙ্ঘন ও আর্থিক অপরাধ তদন্তকারী কেন্দ্রীয় সংস্থা। গত এক দশকে এই সংস্থাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের অভিযোগ ভারতে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।
এ অভিযোগ কি সত্যি, নাকি অতিরঞ্জিত? নিচে প্রমাণ ও পরিসংখ্যানসহ বিশ্লেষণ দেওয়া হলো—
১. বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে ED ব্যবহারের পরিসংখ্যান (২০১৪–২০২৪)
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম, সুপ্রিম কোর্ট রেকর্ড ও সরকারি তথ্য বিশ্লেষণে যা পাওয়া যায়:
The Indian Express (২০২৩) জানায়—
২০১৪ সালের পর ED যেসব রাজনৈতিক মামলায় তদন্ত করেছে, তার ৯৫% অভিযুক্তই বিরোধী দলীয় নেতা বা কর্মী।
সূত্র: Indian Express ইনভেস্টিগেশন রিপোর্ট।
Hindustan Times (২০২৪) জানায়—
২০১৪ সালের আগে প্রতি বছর গড়ে ৬০–৭০টি ED মামলা হতো। ২০১৪–এর পর তা বেড়ে দাঁড়ায় গড়ে ৪০০–এর বেশি।
BBC, Reuters, Al-Jazeera সহ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম লিখেছে—
ভারতে ED ও CBI–এর ব্যবহার বিরোধীদের বিরুদ্ধে “disproportionate and politically selective”।
Supreme Court of India ২০২২ সালে ED-এর ক্ষমতা বাড়ালেও রাজনৈতিক পক্ষপাতের অভিযোগকে “গুরুতর উদ্বেগ” বলে মন্তব্য করে।
➡️ এই তথ্যগুলো দেখায়: তদন্তের পরিমাণ বেড়েছে এবং তা বিরোধীদের দিকে বেশি লক্ষ্য করা হচ্ছে।
২. কোন কোন শীর্ষ বিরোধী নেতার বিরুদ্ধে ED তদন্ত শুরু হয়?
বিগত বছরগুলোতে ED যাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করেছে, তাদের বেশিরভাগই ক্ষমতাসীন BJP–এর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ:
- আরবিন্দ কেজরিওয়াল (AAP)
- সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধী (Congress)
- অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (TMC)
- হেমন্ত সরেন (JMM, জেল)
- সঞ্জয় রাউত (Shiv Sena)
- ফারুক আবদুল্লাহ (NC)
- শরদ পাওয়ার (NCP)
India Today Data Intelligence Unit (DIU) সাক্ষ্য দেয়—
তদন্ত শুরু হয়েছে মূলত নির্বাচন উপলক্ষ্যে বা রাজ্য সরকার পতনের ঠিক আগে।
৩. আন্তর্জাতিক রিপোর্টগুলো কী বলছে? (রি-লিংক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ)
✔️ Freedom House (2024):
ভারতকে “Partly Free” ঘোষণা করে এবং কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর রাজনৈতিক ব্যবহারের সমালোচনা করে।
✔️ V-Dem Institute (2024):
ভারতকে “Electoral Autocracy” হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করে।
✔️ Reporters Without Borders (RSF):
ভারতের প্রেস ফ্রিডম র্যাংক ১৬১ (পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের নিচে)।
সংবাদমাধ্যমের উপর নিয়ন্ত্রণের সরাসরি সম্পর্ক রাজনৈতিক তদন্ত সংস্থাগুলোর অপব্যবহারের সঙ্গে যুক্ত বলে উল্লেখ করেছে।
✔️ Human Rights Watch (HRW):
ED ও CBI–এর মাধ্যমে বিরোধীদের লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে—এমন অভিযোগের সমর্থনে একাধিক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।
৪. RSS–BJP রাজনৈতিক মতাদর্শ ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ব্যবহারের ইস্যু
এই অংশে একাডেমিক ভাষায় ব্যাখ্যা:
- RSS ১৯২৫ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি সাংস্কৃতিক–রাজনৈতিক সংগঠন, যাদের রাজনৈতিক শাখা BJP।
- অক্সফোর্ড, হার্ভার্ড ও লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে—
RSS–এর সংগঠন কাঠামো ইউরোপীয় ডানপন্থী জাতীয়তাবাদী আন্দোলনগুলোর সাথে কিছু মিল রাখে—বিশেষ করে সংস্কৃতির আধিপত্য, জাতীয়তাবাদ, কেন্দ্রীভূত নেতৃত্ব, এবং ভিন্নমত দমন।
✔️ Re-link:
“Populism & Hindu Nationalism – LSE Paper”
এই প্রেক্ষাপটে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ—
ED, CBI, Income Tax, NIA এর মতো সংস্থাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে।
৫. সমালোচকদের ভাষায় মোদির রাজনৈতিক শৈলী
নিচে আমি তোমার মূল বক্তব্যকে আইনি নিরাপদ ভাষায় গবেষণামূলকভাবে সাজালাম:
সমালোচকদের মতে মোদি সরকারের শাসনশৈলীতে দেখা যায়—
- অতিরিক্ত রাষ্ট্রমহিমান্বয়ন
- প্রবল জাতীয়তাবাদ
- সাংস্কৃতিক আধিপত্য
- রাজনৈতিক বিরোধীকে রাষ্ট্রশত্রু হিসেবে উপস্থাপন
- সমালোচনাকে দেশবিরোধিতা হিসেবে চিহ্নিত করা
- সংবাদমাধ্যমের উপর নিয়ন্ত্রণ
- শক্তিশালী কেন্দ্রীয় প্রশাসন
এই বৈশিষ্ট্যগুলোকে রাজনৈতিক বিজ্ঞানীরা “competitive authoritarianism”, “electoral autocracy” বা “strongman politics” বলে উল্লেখ করেন।
Re-link:
V-Dem Institute Research Report: https://www.v-dem.net
৬. তাহলে প্রশ্নের উত্তর কী? — নিরপেক্ষ উপসংহার
✔️ কি মোদি সরকার ED–কে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে?
তথ্য অনুযায়ী—
- বিরোধীদের বিরুদ্ধে ED মামলার সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেশি
- বেশিরভাগ তদন্ত নির্বাচনের আগে বা সরকার পতনের সময় শুরু
- আন্তর্জাতিক রিপোর্টগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে
- সুপ্রিম কোর্টও “অবৈধ গ্রেপ্তার” নিয়ে সতর্ক করেছে
অতএব—
ভারতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের বড় অংশের মতে ED–কে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে—এ অভিযোগের শক্ত প্রমাণ রয়েছে।
এটি ভারতের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় বিরোধী দল, সংবাদমাধ্যম ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর চাপ সৃষ্টি করছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)-এর কার্যকলাপ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরে এই অভিযোগ তোলা হচ্ছে যে, নরেন্দ্র মোদি সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ED-কে একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।
১. ইডি (ED) কী এবং এর মূল দায়িত্ব কী? (Crucial Information)
এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট হলো ভারত সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা একটি বিশেষ আর্থিক তদন্ত সংস্থা। এর প্রধান দায়িত্ব হলো দুটি গুরুত্বপূর্ণ আইন প্রয়োগ করা:
- PMLA (Prevention of Money Laundering Act, 2002): অর্থ পাচার (Money Laundering) সংক্রান্ত অপরাধের তদন্ত এবং অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা।
- FEMA (Foreign Exchange Management Act, 1999): বৈদেশিক মুদ্রা সংক্রান্ত আইন লঙ্ঘন বা অনিয়মের তদন্ত করা।
ইডি-এর ক্ষমতা অন্যান্য তদন্ত সংস্থার (যেমন সিবিআই) চেয়ে ভিন্ন, কারণ PMLA-এর অধীনে ইডি অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে এবং তার সম্পদ সরাসরি বাজেয়াপ্ত করতে পারে।
২. বিতর্কের মূল কারণ: বিরোধী দলের অভিযোগ
মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ED-এর মামলার সংখ্যা এবং কার্যক্রমের পরিধি নাটকীয়ভাবে বেড়েছে, বিশেষ করে বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে।
- মামলার কেন্দ্রবিন্দু: বিরোধী দলের মুখ্যমন্ত্রী, সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য নেতাদের বিরুদ্ধে ED-এর কার্যকলাপকে বিরোধীরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে আখ্যায়িত করেছে। তাদের দাবি, যেসব নেতা সরকারের সমালোচনা করছেন, তাঁদের কণ্ঠরোধ করার জন্যই এসব মামলা দেওয়া হচ্ছে।
- কম সাজাপ্রাপ্তির হার: বিরোধীদের প্রধান যুক্তিগুলোর মধ্যে একটি হলো: ED বিপুল সংখ্যক মামলা দায়ের করলেও, PMLA-এর অধীনে সাজাপ্রাপ্তির হার তুলনামূলকভাবে খুবই কম। তারা দাবি করেন, এর থেকে প্রমাণিত হয় যে মামলাগুলোর উদ্দেশ্য আইনি সুবিচার প্রতিষ্ঠা নয়, বরং রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করা।
- মামলা ও নির্বাচনী সম্পর্ক: অনেক সমালোচক অভিযোগ করেন যে, গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনের আগে বা রাজ্যে ক্ষমতা পরিবর্তনের সময় ED-এর কার্যকলাপ বেড়ে যায়।
৩. সরকারের অবস্থান ও পাল্টা যুক্তি
সরকারের পক্ষ থেকে এই অভিযোগগুলো দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করা হয়েছে। তাদের যুক্তি নিম্নরূপ:
- দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই: সরকারের দাবি, ED তার দায়িত্ব পালন করছে এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতার নীতি অনুসরণ করছে। তারা যুক্তি দেন যে, ED-এর তৎপরতা বৃদ্ধি প্রমাণ করে সরকার অর্থনৈতিক অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর হচ্ছে।
- আইনের শাসন: সরকার জোর দিয়ে বলেছে যে, ED একটি স্বাধীন সংস্থা এবং এর কার্যক্রম আইনের দ্বারা পরিচালিত হয়। কেউ দুর্নীতিতে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সে যে দলেরই হোক না কেন।
- স্বচ্ছতা: সরকারের মতে, আগে দুর্নীতি দমন দুর্বল ছিল। বর্তমান সরকার ED-কে শক্তিশালী করে আর্থিক অপরাধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে, যা দেশের স্বচ্ছতা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য (Relink to Stability)।
উপসংহার
ইডি-এর কার্যক্রমকে সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ হিসেবে দাবি করলেও, বিরোধী দলগুলো এটিকে গণতন্ত্রের কণ্ঠরোধ করার হাতিয়ার হিসেবে দেখছে। এই সংস্থাটি বর্তমানে ভারতের রাজনীতিতে একটি গভীর মেরুকরণ এবং বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
প্রতিবেদক:বিডিএস বুলবুল আহমেদ
আরও খবর জানতে ভিজিট করুন: বাংলাদেশ প্রতিদিন
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার করুন
প্রতিবেদক: বিডিএস বুলবুল আহমেদ
সরকার এবং শাসন—এই দুটি শব্দ প্রায়শই একই অর্থে ব্যবহৃত হয়, কিন্তু রাষ্ট্রবিজ্ঞানে তাদের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য বিদ্যমান। সরকার হলো সেই মূর্ত প্রতিষ্ঠান যা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেয়, আর শাসন হলো সেই বিমূর্ত প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে সেই দায়িত্ব পালন করা হয়। এই পার্থক্যটি আধুনিক রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় সুশাসন (Good Governance) প্রতিষ্ঠার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
১. সরকার ও শাসনের সংজ্ঞা ও প্রকৃতি (Crucial Information)
| ধারণা | সংজ্ঞা ও প্রকৃতি |
| সরকার (Government) | সংস্থা বা কাঠামো: সরকার হলো একটি প্রতিষ্ঠিত সংস্থা (Institution), যার নির্দিষ্ট প্রধান, কর্মীবাহিনী, দপ্তর ও মেয়াদের সীমা রয়েছে। এটি ক্ষমতার ধারক। |
| শাসন (Governance) | প্রক্রিয়া বা পদ্ধতি: শাসন হলো সেই প্রক্রিয়া বা কার্যক্রম, যার মাধ্যমে সরকারের নীতি, আইন এবং সিদ্ধান্তগুলো সমাজে বাস্তবায়িত হয়। এটি ক্ষমতার প্রয়োগ পদ্ধতি। |
- গুরুত্বপূর্ণ তথ্য: সরকার একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তির হাতে থাকতে পারে (যেমন সংসদীয় সরকার), কিন্তু শাসন প্রক্রিয়াটি দেশের সকল অংশীজন (Stakeholders)—বেসরকারি সংস্থা, মিডিয়া, সুশীল সমাজ—সহ সকলের সম্মিলিত অংশগ্রহণকে বোঝায়।
২. 🔗 রি লিংক: পারস্পরিক সম্পর্ক ও ধারাবাহিকতা
সরকার ও শাসন একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। তাদের সম্পর্ককে নিম্নোক্তভাবে ব্যাখ্যা করা যায়:
- সরকার হলো যন্ত্র (Instrument): সরকার হলো সেই যন্ত্র, যা রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য ব্যবহৃত হয়।
- শাসন হলো ফল (Outcome): শাসন হলো সেই যন্ত্র ব্যবহারের পদ্ধতি ও ফলাফল। একটি সরকার পাঁচ বছর পর পরিবর্তিত হতে পারে, কিন্তু শাসন প্রক্রিয়া (যেমন বিচার বিভাগ, প্রশাসন) তার ধারাবাহিকতা বজায় রাখে।
🔗 Relink: জবাবদিহিতার ভিত্তি: শাসন প্রক্রিয়াটি সরকারের চেয়েও ব্যাপক এবং এর পরিধি বেশি। একটি গণতান্ত্রিক সরকারের সফলতা মাপা হয় তার সুশাসন (Good Governance) প্রতিষ্ঠার দক্ষতার ওপর, যা জবাবদিহিতা (Accountability) ও স্বচ্ছতা (Transparency) ছাড়া সম্ভব নয়।
৩. সুশাসন: শাসনের আধুনিক অপরিহার্য শর্ত
১৯৯০-এর দশক থেকে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো, বিশেষ করে বিশ্বব্যাংক, শাসনের গুণগত মান অর্থাৎ সুশাসনকে উন্নয়নের প্রধান শর্ত হিসেবে তুলে ধরেছে। এটি কেবল সরকারের প্রক্রিয়া নয়, এটি একটি আদর্শিক মানদণ্ড।
| সুশাসনের মূল উপাদান (Crucial Information) | তাৎপর্য |
| স্বচ্ছতা (Transparency) | সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া জনগণের কাছে উন্মুক্ত থাকা। |
| জবাবদিহিতা (Accountability) | সরকার ও প্রশাসনের প্রতিটি স্তরের জবাবদিহি নিশ্চিত করা। |
| আইনের শাসন (Rule of Law) | জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকলের জন্য আইনের সমান প্রয়োগ নিশ্চিত করা। |
| অংশগ্রহণ (Participation) | সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় জনগণের ও অংশীজনদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। |
উপসংহার
সরকার (সংস্থা) নীতি তৈরি করে, আর শাসন (প্রক্রিয়া) সেই নীতিগুলোকে সমাজের গভীরে বাস্তবায়ন করে। একটি শক্তিশালী ও স্থিতিশীল রাষ্ট্র গঠনের জন্য ভালো সরকার থাকা যথেষ্ট নয়, বরং ভালো শাসন প্রক্রিয়া (সুশাসন) থাকা অপরিহার্য।
সূত্র
১. রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও জন-প্রশাসন বিষয়ক আন্তর্জাতিক বিশ্লেষণ।
২. বিশ্বব্যাংক (World Bank) কর্তৃক প্রকাশিত ‘Governance and Development’ বিষয়ক প্রতিবেদন।
৩. রাজনৈতিক তত্ত্ব ও সাংবিধানিক আইন সংক্রান্ত গ্রন্থাবলী।
৪. সুশাসন (Good Governance) সম্পর্কিত জাতিসংঘের (UN) নীতিমালা।
প্রতিবেদক:বিডিএস বুলবুল আহমেদ
আরও খবর জানতে ভিজিট করুন: বাংলাদেশ প্রতিদিন
বিষয়ঃ
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার করুন
প্রতিবেদক: বিডিএস বুলবুল আহমেদ
বাংলাদেশের সংবিধান কেবল রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন নয়; এটি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের একটি লিখিত দলিল। ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর এটি গণপরিষদে গৃহীত হয় এবং ওই বছরের ১৬ ডিসেম্বর কার্যকর করা হয়। এই সংবিধানে মোট ১১টি ভাগ, ১৫৩টি ধারা (Articles) এবং ৭টি তফসিল রয়েছে।
১. সংবিধান প্রণয়ন ও ঐতিহাসিক সংযোগ (Crucial Information & Relink)
সংবিধানের উৎপত্তি ও এর প্রথম প্রণেতারা হলেন এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
- প্রণয়ন কমিটি: বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়নের জন্য ৩৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল, যার প্রধান ছিলেন তৎকালীন আইনমন্ত্রী ড. কামাল হোসেন।
- হস্তলিখিত অনুলিপি: সংবিধানের দুটি হাতে লেখা অনুলিপি রয়েছে—একটি বাংলা ও অন্যটি ইংরেজি। এর মূল কাঠামোটি তৈরি হয়েছিল ৯ মাসেরও কম সময়ে, যা সদ্য স্বাধীন একটি রাষ্ট্রের জন্য এক বিশাল অর্জন।
- 🔗 Relink: মূলনীতি পুনরুদ্ধার: সংবিধানের মূল চার নীতি (জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা) বিভিন্ন সময়ে সামরিক ফরমান দ্বারা পরিবর্তিত হলেও, পঞ্চদশ সংশোধনী (২০১১)-এর মাধ্যমে সেগুলোকে আংশিক ও পূর্ণাঙ্গভাবে পুনরুদ্ধার করা হয়, যা প্রমাণ করে সংবিধানের মূল আদর্শই রাষ্ট্রের দীর্ঘমেয়াদী ভিত্তি।
২. সংবিধানের ১১টি ভাগের সারসংক্ষেপ ও গুরুত্বপূর্ণ ধারা
সংবিধানের এই ভাগগুলো রাষ্ট্রের জন্ম থেকে শুরু করে এর শাসন ও জনগণের অধিকারের একটি পূর্ণাঙ্গ চিত্র তুলে ধরে:
| সাংবিধানিক ভাগ | ধারা সংখ্যা | বিষয়বস্তুর মূল কথা (Crucial Information) |
| প্রথম ভাগ: প্রজাতন্ত্র | ধারা ১ – ৭ক | ধারা ৭ অনুযায়ী, প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ এবং সংবিধানই রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন। |
| দ্বিতীয় ভাগ: রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি | ধারা ৮ – ২৫ | রাষ্ট্রের ৪টি মূলনীতি (জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা)। ধারা ৮ এগুলি অনুসরণ করতে সরকারকে বাধ্য করে (আদালতে বলবৎযোগ্য নয়)। |
| তৃতীয় ভাগ: মৌলিক অধিকার | ধারা ২৬ – ৪৭ক | ধারা ২৭ (আইনের দৃষ্টিতে সমতা) ও ধারা ৩২ (জীবন ও স্বাধীনতার অধিকার) সহ মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করা হয়েছে। এটি আদালতের মাধ্যমে বলবৎযোগ্য। |
| চতুর্থ ভাগ: নির্বাহী বিভাগ | ধারা ৪৮ – ৬৪ | রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার ক্ষমতা। নির্বাহী ক্ষমতার প্রয়োগ প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার ওপর ন্যস্ত। |
| পঞ্চম ভাগ: আইন প্রণয়ন বিভাগ | ধারা ৬৫ – ৯৩ | জাতীয় সংসদ ও আইন প্রণয়নের পদ্ধতি। ধারা ৭০ দ্বারা ফ্লোর ক্রসিং নিষিদ্ধ করা হয়েছে। |
| ষষ্ঠ ভাগ: বিচার বিভাগ | ধারা ৯৪ – ১১৭ | সুপ্রিম কোর্ট (আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগ) এর মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও ক্ষমতা নিশ্চিত করা হয়েছে। |
| সপ্তম ভাগ: নির্বাচন | ধারা ১১৮ – ১২৬ | নির্বাচন কমিশন (EC) গঠন ও এর কার্যকারিতা—যা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রধান নিয়ামক। |
| অষ্টম ভাগ: মহাহিসাব নিরীক্ষক | ধারা ১২৭ – ১৩২ | CAG এর মাধ্যমে সরকারি অর্থের সুষ্ঠু নিরীক্ষা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়। |
| নবম ভাগ: বাংলাদেশের কর্মবিভাগ | ধারা ১৩৩ – ১৪১ | সরকারি চাকরি ও PSC এর মাধ্যমে নিয়োগ সংক্রান্ত বিধিবিধান। |
| দশম ভাগ: সংবিধান সংশোধন | ধারা ১৪২ | সংসদের মোট সদস্যের দুই-তৃতীয়াংশ ভোটে সংশোধন প্রক্রিয়া, যা সংবিধানকে স্থিতিশীলতা দেয়। |
| একাদশ ভাগ: বিবিধ | ধারা ১৪৩ – ১৫৩ | শপথ, চুক্তি, তফসিল ও সংবিধানের ব্যাখ্যার চূড়ান্ত বিধান। |
৩. তফসিল: ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ দলিল (Crucial Information)
সংবিধানে ৭টি তফসিল যুক্ত করা হয়েছে, যা আইনি বিধানের পাশাপাশি ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে কাজ করে।
- পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম তফসিল: এই তিনটি তফসিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলোতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ, স্বাধীনতার ঘোষণা এবং স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের মূল টেক্সট সরাসরি যুক্ত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ইতিহাসের এই গুরুত্বপূর্ণ দলিলগুলোকে সংবিধানের অংশ করে স্থায়ী আইনি ভিত্তি দেওয়া হয়েছে।
🔗 Relink: সংবিধানের স্থায়িত্ব: সংবিধানে স্বাধীনতার ঘোষণা ও মূল নীতিগুলো যুক্ত করার অর্থ হলো, ভবিষ্যতে কোনো সরকার চাইলেও সহজে দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের মৌলিক আদর্শগুলোকে পরিবর্তন করতে পারবে না। এটি দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও আদর্শিক ধারাবাহিকতা রক্ষায় একটি শক্তিশালী ঢাল হিসেবে কাজ করে।
সূত্র
১. গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান (ধারা ১ থেকে ১৫৩, সর্বশেষ সংশোধনীসহ)।
২. সংবিধান প্রণয়ন কমিটি (১৯৭২) এবং ড. কামাল হোসেন-এর সাংবিধানিক আইন বিষয়ক রচনা।
৩. সংবিধানের ১৫তম সংশোধনী (২০১১) ও সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়ের বিশ্লেষণ।
প্রতিবেদক:বিডিএস বুলবুল আহমেদ
আরও খবর জানতে ভিজিট করুন: বাংলাদেশ প্রতিদিন



